শীতকালীন শশা মেসি

শীতের স্পেশাল হাইব্রিড শসা মেসি এসিআই সীড এর নতুন উদ্ভাবন মেসি হাইব্রিড শসা শীতকালেও দেয় প্রচলিত জাতের চেয়ে ১০-১৫ শতাংশ বেশি ফলন। তীব্র শীতেও দেয় পরিপুষ্ট ফল যার গড় ওজন হয় ২৫০-২৬০ গ্রাম। তাই ফল হয় বাজারজাতযোগ্য আর নিশ্চিত হয়
জাত : এ সি আই কোম্পানীর শীতকালীন শসা মেসি।
মাটি : মাটি জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ ও উত্তম নিষ্কাশন ব্যবস্থা সম্পন্ন বেলে দোআঁশ মাটি শসা চাষের জন্য উপযুক্ত এবং সেইসঙ্গে ৬.৫-৭.৫ মাত্রার pH মাটিতে থাকলে তা আদর্শ হয়। উচ্চ ফলনের জন্য মাটিতে জৈব কম্পোস্ট বা খামারজাত সার যোগ করে নিশ্চিত হয়ে নিন যে মাটিতে যথেষ্ঠ পরিমান জৈব পদার্থ আছে।
বীজ বপন: অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত। তবে বারোমাস চাষ করা যায়।
ফলন: একর প্রতি গড় ফলন প্রায় ৩৫-৪০ টন।
জীবন কাল: সাধারণত ৯০ দিন পর্যন্ত জীবনকাল হয়ে থাকে। আবহাওয়া ভেদে সময় কম বেশি হতে পারে।
সার প্রয়োগ: ৫০০০ কেজি গোবর, ১০০ কেজি টিএসপি , ৫০ কেজি এমওপি, ৫০ কেজি জিপসাম, ১২ কেজি দস্তা, ১০ কেজি বোরণ জমি তৈরির সময় মাটিতে প্রয়োগ করুন। অবশিষ্ট গোবর (৫০০০ কেজি), টিএসপি (১০০ কেজি), ইউরিয়া (৮০ কেজি), পটাশ (৫০কেজি) চারা রোপণের ৫-৬ দিন পূর্বে মাদায় প্রয়োগ করুন। চারা রোপণের ১০-১৫ দিন পর ১ম বার ,ফুল আসার পর ২য় বার এবং ফল ধরার সময় ৪০ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করুন। মাটির ধরন ধরণ সারের মাত্রা কম বেশি করুন।মাদায় চারা রোপণের পূর্বে সার দেয়ার পর পানি দিয়ে মাদার মাটি ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। অতঃপর মাটিতে জো এলে ৭-১০ দিন পর চারা রোপণ করতে হবে।
সেচ: মাটিতে রস কম থাকলে বপনের ৭-১০ দিনের মধ্যেই একটি সেচ দিন। সাধারণত ২ সপ্তাহ পর পর ২-৩ বার সেচ দিন।জমিতে রসের অভাব থাকলে সেচ দিতে হবে। পুরো জীবন কালে মাটিতে রসের মাত্রা ৫০% এর নিচে নেমে যাবার আগে ( পূর্ণ বয়সী শিকড় ৫০ সেমি) সেচ দিন ।
আগাছা: আগাছা দমনের জন্য জমি চাষ ও মই দিয়ে ভালোভাবে আগাছা পরিষ্কার, বিশুদ্ধ বীজ ব্যবহার এবং পরিষ্কার কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার। সেচ ও সার দেবার পর জো আসা মাত্র আগাছা দমন করুন ।চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর আগাছা দমন করতে হবে। গাছ খুব ঘন থাকলে পাতলা করে দিতে হবে। প্রতি বর্গমিটারে রবি মৌসুমে ৫০-৬০ টি এবং খরিফ মৌসুমে ৪০-৫০ টি চারা রাখা উত্তম।
পোকামাকড় ও রোগবালাই : শসার পাউডারি মিলডিউ রোগ রোগ দমনে সালফার জাতীয় ছত্রাক নাশক (যেমন কুমুলাস ৪০ গ্রাম বা গেইভেট বা মনোভিট ২০ গ্রাম) অথবা কার্বেন্ডাজিম জাতীয় ছত্রাকনাশক (যেমন: গোল্ডাজিম ৫ মিলিটার বা এমকোজিম বা কিউবি বা কমপ্যানিয়ন ২০ গ্রাম) প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর আক্রমণের শুরু থেকে মোট ২-৩ বার প্রয়োগ করতে হবে।
শশার পাতার টার্গেট স্পট এবং গামি স্টেম ব্লাইট রোগ দমনের জন্য ম্যানকোজেব অথবা ম্যানকোজেব + মেটালক্সিল জাতীয় বালাইনাশক (যেমন: রিডোমিল গোল্ড ২০ গ্রাম প্রতি ১০লিটার পানিতে মিশিয়ে) ৭-১০ দিন পরপর ৩ বার স্প্রে করুন। ঔষধ স্প্রে করায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
শসার মোজাইক রোগদমনে জমিতে সাদা মাছি,জাব পোকা দেখা গেলে (বাহক পোকা) ইমিডাক্লোরোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক (যেমন এডমায়ার অথবা টিডো ১০ মি.লি. ২ মুখ ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে। সকাল বেলা গাছে ছাই ছিটিয়ে দিলে এই পোকা গাছ থেকে পড়ে যাবে৷
পুষ্টিগুন: প্রতি ১০০ গ্রাম শসাতে ৯৪.৯ গ্রাম জলীয় অংশ এবং ৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে । তাছাড়া নানাবিধ পুষ্টি উপাদান যেমন, চর্বি-০.১ গ্রাম , খনিজ পদার্থ- ০.৪ গ্রাম, আঁশ- ০.৪ গ্রাম , খাদ্যশক্তি- ২২ কিলোক্যালরি, আমিষ- ১.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ১৪ মিলিগ্রাম, আয়রন- ১.৫ মিলিগ্রাম , অল্প ক্যারোটিন,ভিটামিন বি--১০.১৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২- ০.০২ মিলিগ্রাম ও শর্করা - ৩.৫ গ্রাম ইত্যাদি বিদ্যমান ।
What's Your Reaction?






