হাইব্রিড পেঁপে চাষ করার পদ্ধতি

সহজ ভাবে হাইব্রিড পেঁপে চাষ করার পদ্ধতি

Feb 11, 2025 - 23:57
Feb 13, 2025 - 16:44
 0  12
হাইব্রিড পেঁপে চাষ করার পদ্ধতি

হাইব্রিড পেঁপে

হাইব্রিড পেঁপে চাষ করার পদ্ধতি 

অতি উচ্চফলনশীল, প্রতিটি গাছেই পেঁপে ধরবে, রোগব্যাধি সহনশীল। ফলের ওজন ২-৩ কেজি, লম্বাটে। কাঁচা পেঁপে সঙ্গী হিসাবে উপাদেয়, পাকা পেঁপে মিষ্টি। চারা রোপনের ৪ মাস পর থেকে কাঁচা পেপে এবং ৬ মাস পর থেকে পাকা পেঁপে সংগ্রহ শুরু করা যায়। গাছ খাটো, খুব শক্তিশালী, পাতার রং হালকা সবুজ। দীর্ঘদিন ফলন পাওয়া যায়।

হাইব্রিড জাতের পেঁপে চারা উৎপাদন পদ্ধতি:- F1

পেঁপের বীজগুলো ১ ঘন্টা রোদে শুকিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে। তারপর ১২ ঘন্টা ভিজানোর পর পানি ফেলে দিয়ে বীজগুলো ছাই মেখে ২ ভাগ মাটি ১ ভাগ শুকনো গোবর মিশিয়ে মাটিতে বীজগুলো বুনতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে যে, বীজগুলো যেন মাটির বেশি নীচে না যায়। আধা ইঞ্চির একটু কম মাটির নিচে বুনতে হবে। তারপর খড়/ধানের কুড়া দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিতে হবে। মাটি যদি বেশী শুকিয়ে যায় তবে ঝর্ণা দিয়ে পানি দিতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে পানি যেন বেশি পরিমাণে দেয়া না হয়। এভাবে ১০/১২ দিন পর থেকে চারা বের হওয়া শুরু হবে। এমতাবস্থায় খড়গুলো সরিয়ে দিতে হবে এবং চারার গোড়ার মাটি খুচিয়ে দিতে হবে যাতে রোদে শুকাতে পারে। শীতের সময় চারা বের হতে ২০/২৫ দিন সময় লাগতে পারে। ফলন: গাছ প্রতি ৮০-১০০ কেজি।

বীজের পরিমাণ: একর প্রতি ৩০ গ্রাম।

বীজ বপন: সারা বছর। পলি ব্যাগে বীজ বপন করে চারা উৎপাদন করা উত্তম।

চারার বয়স: ৩০-৪০ দিন বয়সের চারা রোপন করতে হবে। তবে শীতকালে বেশী বয়সের চারা রোপন করেও

ভাল ফলন পাওয়া যাবে।

চারা রোপনঃ ৬ ফুট × ৬ ফুট দূরত্বে মাদা তৈরী করে প্রতি মাদায় ১টি চারা বপন করতে হয়।

জমি তৈরী। চাষ ও মই দিয়ে ভালভাবে জমি তৈরী করতে হবে। শেষ চাষের সময় প্রতি শতাংশে (প্রতি ডেসিমেলে) ৪০০ গ্রাম জিপসাম, ৪০ গ্রাম জিংক সালফেট ও ৪০ গ্রাম বোরাক্স (সোহাগা) সার ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে।

মাদা তৈরী ও সার প্রয়োগ: ৬ ফুট x৬ • ফুট দূরত্বে মাদা তৈরী করতে হবে।

প্রতিটি মাদা ২ ফুট চওড়া ২ ফুট প্রস্থ ও দেড়ফুট গভীর গর্ত করে ১০-১৫ দিন ফেলে রাখতে হবে। অতঃপর গর্তের মাটির সাথে ১০ কেজি গোবর অথবা কম্পোষ্ট সার, ২৫০ গ্রাম খৈল, ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, ২৫০ গ্রাম টিএসপি এবং ১২৫ গ্রাম এমপি সার মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে। গর্তের মাটি ভরার এক সপ্তাহ

পর চারা রোপন করতে হবে।

সার উপরি প্রয়োগ: প্রথমবার:- চারা রোপনের ২০ দিন পর প্রতি শতাংশে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ১০০ গ্রাম পটাশ সার গাছের গোড়ার চারপাশে প্রয়োগ করতে হবে। দ্বিতীয়বার:- চারা রোপনের দেড় মাস পর প্রতি শতাংশে ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০০ গ্রাম পটাশ সার প্রয়োগ করতে হয়। তৃতীয়বারঃ- চারা রোপনের আড়াই মাস পর প্রতি শতাংশে ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০০ গ্রাম পটাশ সার প্রয়োগ করতে হয়। তারপর প্রতি দেড়মাস পর পর প্রতি শতাংশে ৫০০ গ্রাম ইরিয়া ও ৫০০ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করে যেতে হবে।

সেচ প্রয়োগ ও পানি নিষ্কাশন: পেঁপে বাগানে প্রয়োজনে নিয়মিত পানি সেচ দিতে হবে আবার বৃষ্টির সময়

খেয়াল রাখতে হবে যাতে বৃষ্টির পানি তাড়াতাড়ি বের হয়ে যায়।

খুঁটি বা ঠেস দেওয়া: ঝড় বাতাসে যাতে গাছ পড়ে না যায় সেজন্য খুঁটি বা টেস দিতে হবে।

ফল সংগ্রহঃ পুরাপুরি পাকার পূর্বেই অর্থাৎ চামড়া কিঞ্চিত হলুদ হলেই পেঁপে সংগ্রহ করা শ্রেয়।

সতর্কতা

: হাইব্রিড জাতের বীজ থেকে উৎপাদিত ফসলের দানা কোন অবস্থাতেই বীজ হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। হাইব্রিড জাতের বীজ প্রতিবারই নতুনভাবে সংগ্রহ করে আবাদ করতে হবে।

বিঃ দ্রঃ ঠান্ডার সময় বীজ ফুটিয়ে নিলে ভালো হবে।

বীজ জাগ দিয়ে মুখ ফাটিয়ে নিয়ে বপন করা উত্তম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow